শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১৮

বাংলা শব্দভাণ্ডার


ভাষার সম্মান নির্ভর করে তার প্রকাশ ক্ষমতার ওপর । যে ভাষা যত বিচিত্র ভাববস্তু এবং যত বেশি অনুভূতি প্রকাশ করতে সক্ষম সে ভাষা ততবেশি উন্নত । ভাষার এই প্রকাশ ক্ষমতার আধার হলো ভাষার শব্দ সম্পদ । ভাষার এই শব্দ সম্পদ 3 ভাবে সমৃদ্ধ হয়
১. উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত প্রাচীন ভাষা সাহায্যে ।
২.অন্য ভাষা থেকে গৃহীত আগন্তুক শব্দের সাহায্যে এবং
৩. নতুন সৃষ্ট শব্দের সাহায্যে ।

আজকের উন্নত বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে তুলেছে বাংলা শব্দ ভান্ডার কে আমরা উৎসগত দিক থেকে তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। যথা:-
১. মৌলিক শব্দ ২. আগন্তুক শব্দ ৩. নব গঠিত শব্দ

১. মৌলিক শব্দ:- যেসব শব্দ প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা বৈদিক ও সংস্কৃত থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে বাংলায় এসেছে সেগুলিকে মৌলিক শব্দ বলে। এই মৌলিক শব্দগুলিকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায় :- ১.তৎসম ২.অর্ধ তৎসম ৩.তদ্ভব
তৎসম:- যেসব শব্দ প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে অপরিবর্তিতভাবে বাংলায় এসেছে সেগুলিকে তৎসম শব্দ বলে। এর মূল উৎস হলো বৈদিক ও সংস্কৃত ভাষা। বাংলায় প্রচলিত তৎসম শব্দের সংখ্যা কম নয়। যেমন - জল,বায়ু ,কৃষ্ণ সূর্য ,জীবন-মৃত্যু ,বৃক্ষ, নারী ,পুরুষ ইত্যাদি।

© তৎসম শব্দ কে আবার দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় :- 

  ১. সিদ্ধ তৎসম ও ২. অসিদ্ধ তৎসম
সিদ্ধ তৎসম:- যেসব শব্দ বৈদিক ও সংস্কৃত সাহিত্যে পাওয়া যায় এবং যেগুলি ব্যাকরণসিদ্ধ সেগুলিকে সিদ্ধ তৎসম বলে। যেমন:- সূর্য মিত্র কৃষ্ণ ইত্যাদি।

অসিদ্ধ তৎসম:- যেসব শব্দ বৈদিক ও সংস্কৃত থেকে পাওয়া যায় না এবং ব্যাকরণসিদ্ধ নয় অথচ প্রাচীনকালে মৌখিক সংস্কৃতির প্রচলিত ছিল সেগুলিকে Dr Sukumar Sen অসিদ্ধ তৎসম বলেছেন। যেমন:- চাল ডাল ঘর ইত্যাদি।

অর্ধ তৎসম শব্দ :- যেসব শব্দ প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে মধ্যবর্তী স্তর প্রাকৃতের মাধ্যমে না এসে সোজাসোজি বাংলায় এসেছে এবং আসার পর কিঞ্চিৎ পরিবর্তন ও বিকৃতি লাভ করেছে সেগুলিকে অর্ধ-তৎসম শব্দ বলে। যেমন :-
কৃষ্ণ >কেষ্ট, নিমন্ত্রণ > নেমন্তন্ন , ক্ষুধা > খিদে,

তদ্ভব:- যেসব শব্দ সংস্কৃত থেকে সোজাসুজি বাংলায় আসেনি মধ্যবর্তী প্রাকৃত স্তর অতিক্রম করে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় এসেছে তাদের তদ্ভব শব্দ বলে।

তদ্ভব শব্দ কে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় :- দেশি ও বিদেশি ।

দেশি তদ্ভব শব্দ:- যেসব তদ্ভব শব্দ বৈদিক ও সংস্কৃত থেকে নিজস্ব পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলায় এসেছে সেগুলিকে দেশি তদ্ভব শব্দ বলে।

বিদেশি তদ্ভব শব্দ:- যেসব শব্দ বৈদিক ও সংস্কৃত থেকে প্রথমে ইন্দো-ইউরোপীয় বংশের অন্য ভাষা থেকে বা ইন্দো-ইউরোপীয় ছাড়া অন্য বংশের ভাষা থেকে আগন্তুক ভাবে এসেছিল এবং পরে প্রাকৃত মাধ্যমে পরিবর্তন লাভ করে বাংলায় এসেছে সেই শব্দগুলিকে বিদেশী তদ্ভব শব্দ বলে।

২. আগন্তুক শব্দ :- যেসব শব্দ অন্য কোন ভাষা থেকে সংস্কৃত হয়ে আসেনি অন্য ভাষা থেকে সোজাসুজি বাংলায় এসেছে সেই শব্দগুলিকে আগন্তুক শব্দ বলে।

. নব গঠিত শব্দ:- এই নবগঠিত শব্দের মধ্যে কিছু বিমিশ্র শব্দ রয়েছে আবার কিছু মিশ্র শব্দ আছে । যেমন :-হেড পন্ডিত , হাফহাতা ইত্যাদি

বঙ্গদর্শন পত্রিকা

বঙ্কিমচন্দ্রের চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা বঙ্গদর্শন। বহরমপুরে সরকারি চাকরিতে অধিষ্ঠিত থাকার সময় তিনি এই পত্রিকার প্রকাশের পরিকল্পনা করেন সাহিত্য মূলক রচনা বৈচিত্র সৌন্দর্য ও রুচির দিক থেকে এটি ছিল ঊনবিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ পত্রিকা । রবীন্দ্রনাথ পত্রিকাটির আবির্ভাব সম্পর্কে স্মৃতিচারণা করেছেন এইভাবে "পূর্বে কি ছিল এবং পরে কি পাইলাম তাহা দুই কালের সন্ধিস্থলে দাঁড়াইয়া আমরা এক মুহূর্তে অনুভব করিতে পারিলাম"।

বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন একাধারে এই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রধান লেখক। পত্রিকাটি কিছু দিন বন্ধ থাকার পর বঙ্কিমচন্দ্রের অগ্রজ সঞ্জীব চন্দ্রের সম্পাদনায় এটি পুনঃ প্রকাশিত হয়। বাংলা সাহিত্যে এই পত্রিকার অবদান নানা দিক থেকে উল্লেখযোগ্য সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র প্রথম সামাজিক উপন্যাস 'বিষবৃক্ষ' প্রধান উপন্যাস গুলি এবং বহু প্রবন্ধ এখানে প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকাটি কেন্দ্র করে বঙ্কিম অনুসারী এবং তার বাইরে এক বৃহৎ লেখক গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এর মতো লেখকদের পাশাপাশি দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর , তরুণ রবীন্দ্রনাথের লেখাও এখানে প্রকাশিত হয় এই পত্রিকার হাত ধরেই।

বাংলা সাহিত্য ,সামাজিক উপন্যাস , পুস্তক সমালোচনা আধুনিক প্রবন্ধ রচনা ইত্যাদি বহু নতুন আঙ্গিকে রচনার সূত্রপাত ঘটে। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ এই পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়ে নবপর্যায় বঙ্গদর্শন প্রকাশ করে রবীন্দ্রনাথের পর মোহিতলাল মজুমদার ও কিছুকাল এই পত্রিকার সম্পাদনা করেছিলেন।

Books Writers Names

1. The city of god - গ্রন্থটির রচয়িতা কে? Ans :- Augustine of Hippo 2. The prince - গ্রন্থটির রচয়িতা কে? Ans :- Niccolo Machiavelli ...